সিমেন্ট শিট-ব্রেক শুতে ক্ষতিকর ‘অ্যাসবেস্টস’, আমদানি বন্ধের দাবি

Passenger Voice    |    ০৪:৪০ পিএম, ২০২৪-০৪-১৫


সিমেন্ট শিট-ব্রেক শুতে ক্ষতিকর ‘অ্যাসবেস্টস’, আমদানি বন্ধের দাবি

বাংলাদেশে তৈরি সিমেন্ট শিট ও গাড়ির ব্রেক শুতে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর অ্যাসবেস্টসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক অ্যাসবেস্টসের আমদানি, ব্যবহার ও বিপণন নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ অকুপেশনাল সেফটি, হেলফ ও এনভায়রনমেন্ট ফাউন্ডেশন (ওশি ফাউন্ডেশন)।

সোমবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ১১টায় রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক ক্রিসোটাইল অ্যাসবেস্টস এবং অ্যাসবেস্টসযুক্ত পণ্যের অবাধ আমদানি, বিপণন ও ব্যবহার বন্ধের দাবিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান ওশি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আমিনুর রশীদ চোধুরী রিপন।

তিনি জানান, বাংলাদেশে তৈরি সিমেন্ট শিট, একটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের বেবি টেলকম পাউডার, গাড়ির ব্রেক শু ও সীতাকুন্ডে জাহাজ ভাঙা শিল্প এলাকা থেকে সংগৃহীত নমুনা বিশ্লেষণ করে সিমেন্ট শিটে ৫০ ভাগ ও ব্রেক শুতে ১৫ ভাগ ক্রিসোটাইল অ্যাসবেস্ট‌সের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। বেবি টেলকম পাউডার ও সীতাকুন্ড এলাকার মাটির যে নমুনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছিল তাতে অ্যাসবেস্ট‌স পাওয়া যায়নি। তবে আরও নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন আছে বলে জানান আমিনুর রশীদ চৌধুরী রিপন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অ্যাসবেস্ট‌স একটি ধূসর রঙের খনিজ যা সহজেই দীর্ঘ নমনীয় ফাইবারে বিভক্ত হয়ে যায়। এটি অগ্নিরোধী, বিদ্যুৎ অপরিবাহী এবং রাসায়নিকভাবে প্রতিরোধী। শ্বাস নেওয়া হলে ধূলিকণা হিসেবে এটি দেহে প্রবেশ করে গুরুতর ফুসফুসের রোগের কারণ হতে পারে। অ্যাজবেস্টস একটি নীরব মরণঘাতক।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার তথ্যানুযায়ী, বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ লাখ শ্রমিক অ্যাজবেস্টস সংক্রমণজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। বিশ্বের ৬২টি দেশে অ্যাসবেস্টসের ক্ষতিকারক দিক বিবেচনায় এর উৎপাদন, আমদানি ও বিপণন নিষিদ্ধ করেছে। বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী অ্যাসবেস্টস সংক্রমণজনিত রোগ এবং ক্ষতিপূরণযোগ্য পেশাগত ব্যাধি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন ওশি ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারপারসন ড. এস এম মোর্শেদ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি হেলথ সায়েন্স এর ডিপার্টমেন্ট অব অকুপেশনাল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল হেলথ এর অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন ফারুকী, সাংবাদিক ও গবেষক আতাউর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর হুমকি বিবেচনায় নিয়ে অবিলম্বে অ্যাসবেস্ট‌সের আমদানি, ব্যবহার ও বিপণন নিষিদ্ধ করার দাবি জানান তারা। এছাড়াও ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশে সকল প্রকার অ্যাসবেস্ট‌সের ব্যবহার বন্ধকরণ বিষয়ক সভায় ক্রিসোটাইল অ্যাসবেস্ট‌সের ক্ষতিকারক প্রভাব বিষয়ে গবেষণাসহ অন্যান্য যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছিল তা বাস্তবায়ন করার তাগিদ দেন তারা।